আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট : ঈদের ছুটিতে ভ্রমন পিপাসুদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানকে। এবারই প্রথম ঈদকে সামনে রেখে পার্কে চালু করা হচ্ছে জাদু প্রদর্শনী। পাশাপাশি প্রাকৃতিক অপরূপ সৌন্দর্যের পর্যটন কেন্দ্র রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারন্য এবং গ্রীনল্যান্ড পার্কে নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। নিরাপত্তা বাড়াতে পুলিশ ও বিজিবি’র পাশাপাশি আনসার সদস্য ও ভলান্টিয়ার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োজিত থাকবে পর্যটন পুলিশ সদস্যও।
২০০৫ সালে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান ও রেমা-কালেঙ্গা অভযারন্য ঘোষনার ২০০৯ সালে চালু হয় টিকেট কেটে প্রবেশের ব্যবস্থা। ভেতরে রয়েছে ট্রেইল, ওয়াচ টাওয়ার, বসার বেঞ্চসহ নানা অবকাঠামো। ঈদকে সামনে রেখে নতুন সাজে এবার সেজেছে সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান।
এছাড়া পরিবেশ বান্ধব পর্যটন ব্যবস্থাপনায় আগত পর্যটকদের জন্য রয়েছে টুরিষ্ট স্পট, বসার বেঞ্চ, বণ্যপ্রাণীর আভাসস্থল, ট্রেইল সংস্কার, দোলনা, বিলবোর্ড, পানি ও টয়লেট ইত্যাদি। এছাড়া ফরেষ্ট গেষ্ট হাউজ, স্টুডেন্ট ডরমিটরি, ইন্টার পিটিশন সেন্টার ও ইকো-কটেজগুলো ঝাড়মোছ করা হয়েছে।
টিকেট কাউন্টার থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক ২২ টাকা, অপ্রাপ্ত/ছাত্র ১২টাকা ও পার্কিং ৩০ টাকা এবং পিকনিক স্পট ব্যবহারের জন্য প্রতিজন ১২ টকা জমা দিয়ে টিকেট কিনতে হয়। উদ্যানে বেড়ানোর জন্য রয়েছে দক্ষ ইকো গাইড। বাড়ানো হয়েছে জনবল। পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ঈদের দিন থেকে পরবর্তী ৫ দিনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৫ জন আনসার সদস্য। তাদের পাশাপাশি পর্যটন সহায়ক পুলিশ, বিজিবি টহল এবং ভলান্টিয়ারতো রয়েছেই। চুরি ছিনতাই রোধে পার্কে থাকবে মোবাইল টিম। তারা ঈদের দিন থেকে পার্ক এলাকায় টহল দিবে।
এ ব্যাপারে সাতছড়ি পার্কের ঈদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ জানান, আমরা পর্যটকদের কথা চিন্তা করেই নানা ফ্যাসিলিটি বাড়ানোসহ তাদের নিরাপত্তার জন্য সকল ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছি। নিরাপত্তার জন্য মোবাইল টিম ও বিজিবি এবং পুলিশের আলাদা মোবাইল টিম রয়েছে। তিনি এ জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।
সাতছড়ি জাতীয় উদ্যানে ১৯৭ প্রকৃতির জীব বৈচিত্রের রয়েছে ভরপুর। ১৯০ প্রজাতীর গাছপালার মধ্যে রয়েছে জাম, সেগুন, কড়ই, জারুল, বহেরা, হরতকি, পাম, গর্জন, চাপালিশ ইত্যাদি। ১৪৯ প্রজাতির পাখির মধ্যে রয়েছে ধনেশ, ময়ুর, বনমুরগ, ময়না, টিয়া, শালিক, মাছরাংগা ইত্যাদি। ১৮ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪ প্রজাতির স্থন্যপায়ী ও ৬ প্রজাতির উভচর প্রাণী।
এদের মধ্যে বানর, হনুমান, চশমা বানর, বনবিড়াল, মেছোবাঘ ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের ২৪-২৫ টি আদিবাসী পরিবার। এদিকে উপজেলার রেমা-কালেঙ্গা অভয়ারণ্য ও প্রাইভেট ব্যবস্থাপনায় গ্রীণল্যান্ড পার্কেও পর্যটক বরণে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে উপজেলার ২৪টি চা বাগান, আদিবাসী পল্লী ও সীমান্ত এলাকায়ও পর্যটকদের উপচেপড়া ভীড় জমে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।